শৌখিন রান্না হোক কিংবা রুপচর্চায়, ঘি এর প্রয়োজনীয়তার তো শেষ নেই। সবরকম প্রয়োজনে স্বাস্থ ও মানসম্মত ঘি যথেষ্ঠ। তবে সেটা কতোটা মানসম্মত সেটা বোঝার উপায়ও নিশ্চই জানতে হবে!
ঘি
ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভূত হওয়া এক প্রকার পরিশোধিত মাখন হলো ঘি। খাবারের স্বাদ- গন্ধ বৃদ্ধিতে ঘি বঙ্গ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে বহুদিন ধরে।
খাঁটি ঘি খুবই স্বাস্থ্যকর। সম্প্রতি বিশ্বের অনেক পুষ্টিবিদ এ খাবারের উপকারিতা সম্পর্কে জানিয়েছেন। পুষ্টিবিদদের মতে, আলসার ও কোষ্টকাঠিন্য এবং স্বাস্থ্যকর চোখ ও ত্বকের চিকিৎসায় এবং ওষুধ তৈরিতে ঘি ব্যবহার করা হয়।
ঘিয়ের বহু গুণের কথা আমরা শুনে থাকলেও স্বাস্থ্য ও ওজন সচেতন মানুষের কাছে ঘি শত্রুর মতো। তবে এই ধারণা কিন্তু একেবারেই ভুল।
খাঁটি ঘি এর উপকারিতা যেমন রয়েছে সেই সাথে ঘি কিন্তু ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
ঘি তে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ , ‘ডি’ , ‘ই’ এবং ‘কে’। অন্যান্য উপাদানের চেয়ে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ই’-এর চমৎকার উৎস হচ্ছে খাঁটি ঘি
খাঁটি ঘি চেনার উপায়
- এক চামচ ঘি দিন গরম প্যানে। যদি ঘি সাথেসাথেই গলে যায় এবং গাঢ় বাদামি রঙে পরিণত হয়, তবে এটি খাঁটি ঘি। যদি ঘি গলতে সময় নেয় এবং হলদে হয়ে যায়, তবে বুঝবেন এতে ভেজাল আছে।
- একটি কাচের বয়ামে খানিকটা ঘি নিন। একটি গরম পানির পাত্রে বয়ামটি বসিয়ে গরম করুন। গলে গেলে ফ্রিজে রেখে দিন। যদি ঘি দুই লেয়ারে জমে, তা হলে বুঝবেন ঘিয়ের সঙ্গে নারিকেল তেল মেশানো হয়েছে।
- বিশুদ্ধ ঘি বা মাখনে ভেজাল হিসেবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডালডা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এক চামচ ঘি বা মাখন গলিয়ে একটি স্বচ্ছ কাঁচের বয়াম বা বোতলে রাখুন। এতে একই পরিমাণ মিউরিঅ্যাটিক অ্যাসিড ও সামান্য চিনি মেশান।
এরপর এর মুখ বন্ধ করে খুব জোরে জোরে ঝাঁকান। কিছুক্ষণ ঝাঁকানোর পর পাত্রটি স্থির অবস্থায় রেখে দিন। কিছুক্ষণ পর এর নিচে যদি লাল রঙের আস্তরণ পড়ে, তাহলে বুঝবেন এতে ভেজাল মেশানো রয়েছে।
- ১ চা চামচ ঘি নিন হাতের তালুতে। ঘি যদি ত্বকের সংস্পর্শে আপনাতেই গলে যায় তবে বুঝে নিবেন ঘি বিশুদ্ধ।
খাঁটি ঘিয়ের উপকারিতা
-কোলেস্টেরল সমস্যা সমাধানে ঘি অনেক উপকারী। তবে যাদের উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল রয়েছে, তাদের খাবারের তালিকায় ঘি না থাকাই ভালো।
-ঘিয়ের মধ্যে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে এনার্জি বাড়ায়।এনার্জি বাড়লে কর্মক্ষমতা বাড়ে। ফলে ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
-ঘিয়ের মধ্যে থাকা বাটাইরিক অ্যাসিড হজম ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
-ঘি এর স্ফুটনাঙ্ক খুব বেশি বলে ২৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত গরম করা যায়। অধিকাংশ তেলই এই তাপমাত্রায় ক্ষতিকারক হয়ে যায়। তাই ঘি নিঃসন্দেহে নিরাপদ।
- ত্বকের যত্মে এটি খুবই উপকারী। সুশ্রী থাকতে এবং ত্বকের মসৃণতা বজায় রাখতে নিয়মিত ঘি ব্যবহার অনেক কার্যকরী।
- ঘি সহজে নষ্ট হয় না বলে অনেক দিন পর্যন্ত ঠিক থাকে।
- অধিকাংশ দুগ্ধজাত দ্রব্যের মতো ঘি থেকে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
- ভিটামিন এ ও ই পুষ্টিগুণে ভরপুর ঘি।
- ঘি-তে আছে কনজুগেটেড লিনোলেক অ্যাসিড- যার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের অ্যান্টি-ভাইরাল গুণ রয়েছে। যা ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। ডেলিভারির পর নতুন মায়েদের ঘি খাওয়ানো হয় এই কারণেই।
- ঘিয়ে থাকা বাটইরিক অ্যাসিড শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।