পড়তে বসলেই ঘুম পায়। জীবন নিয়ে সব তিক্ততা দূরে সরিয়ে যখন পড়তে বসি, এর একটু পরই শুরু হয়ে যায় ঝিমুনি, রাজ্যের ঘুম এসে ভর করে তখন। যেনো বইয়ের পাতায় পাতায়, অক্ষরে অক্ষরে কেউ ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছে। এই সমস্যাটা কমবেশি সবার ক্ষেত্রেই হয়। মাথায় এই প্রশ্নটাও হাজার বার জেঁগেছে, পড়তে বসলে আসলে ঘুম পায় কেনো? কী এমন রহস্য লুকিয়ে আছে পড়া আর ঘুম সম্পর্কে? বিশেষজ্ঞরা কিন্তু এর পেছনের বিজ্ঞান খুঁজে বের করেছেন। কী সেই বিজ্ঞান?
- ১.পড়তে বসলে ঘুম আসে কেন
- ২.পড়তে বসলে ঘুম তাড়ানোর উপায়
- ৩.ঘুম আসে কেন
- ৪.বসে থাকলে ঘুম আসে কেন
- ৫.রাতে ঘুম তাড়ানোর উপায়
- ৬.কি খেলে রাতে ঘুম আসেনা
- ৭.দুপুরে ঘুম তাড়ানোর উপায়
- ৮.অধিক সময় পড়ার উপায়
- ৯.সকালের ঘুম দূর করার উপায়
- ১০.ঘুম কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
- ১১.অফিসে ঘুম দূর করার উপায়
- ১২.অতিরিক্ত ঘুম কোন রোগের লক্ষ্মণ
পড়তে বসলে ঘুম আসে কেন
ক্লান্তি থেকে ঘুম আসে। যদি সারাদিন প্রচুর পরিশ্রম হয় তাহলে আপনার ঘুম আসাটাই স্বাভাবিক। দেখা যায় আমরা যখন বই পড়ি তখন চোখ সরাসরি বইয়ের পাতায় নিবদ্ধ থাকে, আর প্রতিমুহূর্তে চোখকে বাম থেকে ডান দিকে, আবার ডান থেকে বাম দিকে ঘুরিয়ে নিতে হয়। শুধু চোখ ঘুরিয়ে দেখলেই তো হয়না, চোখ যা দেখে তা থেকে মস্তিষ্ককে অর্থবোধক শব্দ, বাক্য ও অনুচ্ছেদও তৈরি করে নিতে হয় এবং সেগুলো দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে, সেটাও অনুধাবন করতে হয়। এছাড়া পঠিত বিষয়বস্তুকে ভবিষ্যতের জন্য মনে রাখার চ্যালেঞ্জটাও পাঠ্যপুস্তক পড়ার সময় বাড়তি চাপ হিসেবে যোগ হয়। ক্রমাগত নাড়াচাড়ায় চোখের পেশি যেমন ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তেমনই একসাথে অনেকগুলো কার্য সম্পাদন করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে ওঠে আমাদের মস্তিষ্কও। এইসময় চোখ ও মস্তিষ্ক উভয়েরই বিশ্রামের প্রয়োজন পড়ে। আর ঘুমের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বিশ্রাম তো আর কিছু হতেই পারেনা! অগত্যা ধীরে ধীরে চোখের পাতা ভারি হয়ে আসে, এবং মস্তিষ্ক ঘুমের প্রয়োজনীয়তা বোধ করতে থাকে।
অনেকে পড়ার সময় নিজের জন্য একটি আরামদায়ক অবস্থা তৈরি করে নিতে চায়। কেউ কেউ শুয়ে শুয়ে পড়ে, আবার কেউ বিশ্রামের ভঙ্গিতে শরীর এলিয়ে দিয়ে পড়ে। মনে হতে পারে এভাবে পড়লে পড়া সহজ হবে, কিন্তু বাস্তবতা বিপরিত। শরীরকে আরামদায়ক অনুভূতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলে মস্তিষ্ক ধরেই নেয় যে এখন বিশ্রামের সময়। এবার তখন যদি পড়ার মতো মানসিক পরিশ্রমের একটি কাজ করতে যাওয়া হয়, তখন মস্তিষ্ক পিঠ বাকিয়ে বসবে। ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে ঘুমের বুড়ি এসে উপস্থিত হয়।
আবার অনেকে আছে রাতে প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুমায়, কম ঘুমানোটা কিন্তু সবসময়ই অপকারী। তাই স্বল্প ঘুমধারীদেরও পড়তে বসলে ঘুম পায়। নিজের ভবিষ্যত নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকা আর চিল মুডে থাকাটাও কিন্তু পড়তে বসলে ঘুম আসার কারণ। পড়াশোনা নিয়ে যদি আসলেই চিন্তিত হতেন তো ঘুম ঠিকই পালিয়ে যেতো। তবে অন্যতম একটা কারণ হলো শারীরিক ও স্নায়ুবিক দুর্বলতা। শরীর দুর্বল থাকলে স্নায়ু কোষগুলো এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়ে আর সেটাকে বলে স্ট্রেচ, তাই পড়তে বসলে ঘুম আসবেই। এছাড়াও পড়ার প্রতি অমনোযোগী থাকাটাও বড় একটি কারণ।
পড়তে বসলে ঘুম পাওয়ার সমস্যাটি জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। ক্যারিয়ারের নিয়ে সিরিয়াস হলেও, আজ পড়বো কাল পড়বো বলে বসে থাকতে থাকতে যখন পড়তে বসে যাই, তখন এসে চেপে ধরে এই ঘুম। পরিক্ষার আগের রাত কিংবা নিয়মিত পড়াশোনাই হোক না, এই ঘুমের জ্বালায় পড়াশোনাই হয়ে উঠছেনা। ফলাফল অন্ধকার ভবিষ্যৎ!
পড়তে বসলে ঘুম তাড়ানোর উপায়
- ঘুম আসতে শুরু করলেই বরফ ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখ মুখ ধুয়ে নিবেন ভালো করে। এতে অনেকটা কাজ হবে। অল্পের জন্য একটু হেটেও আসতে পারেন বাইরে থেকে। তবে সবচে ভালো হয় হেটে হেটে পড়লে।এতে ঘুম পালাতে কুল পাবেনা।
- যখন ঘুম আসবে তখন লেখালেখি বা অংক করবেন। লেখা বা অংক করার সময় অনেক মনোযোগী হতে হয়। আর পড়ায় যদি মনোযোগী হতে পারেন ঘুম আসবেনা বলাই যায়।
- আর্লি টু বেড,আর্লি টু রাইজ বলে একটা কথা আছে। সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতি রাতে অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো জরুরী। অতিরিক্ত ঘুমাবেন না বা কমও ঘুমাবেন না এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন।
- পড়াশোনার সময় নিজেকে ঘুমিয়ে পড়া থেকে বিরত রাখতে, পুষ্টি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এর বিকল্প নেই।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন। পড়াশোনার সময় ঘুমিয়ে পড়ার আরেকটি কারণ অপর্যাপ্ত পানি পান। একটি গবেষণার হিসাবে, ডিহাইড্রেশন আক্ষরিকভাবে আপনার মস্তিষ্ককে সঙ্কুচিত করতে পারে!
- জোরে জোরে পড়ুন এবং বেশিবেশি লিখুন। জোরে পড়া আপনাকে মনে মনে পড়ার চেয়ে আরো বেশি ব্যস্ত রাখতে পারে যা পড়াশোনার সময় না ঘুমাতে সাহায্য করবে।
- পড়ার সময় আরাম করা যাবে না। পড়াশোনার সময় ঘুমিয়ে যাওয়ার একটা বড় কারণ খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করা। তাই আরাম করে না পড়ে গুরত্ব দিয়ে পড়ুন।
- চুইং গাম খেতে পারেন। ঘুম আসলে টি চিবোতে পারেন। আপনার মুখ যদি অবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে তবে পড়ায় মনোযোগ হারানোর ঝুঁকি কম।
- পড়ার সময় কানে হ্যাডফোন লাগিয়ে গান শুনতে পারেন।(যদি মনোযোগে ব্যঘাত না ঘটায়)। ঘুম না আসতে অনেক কাজে দেয়।
- পড়ার ঘরকে আলোকিত রাখুন। অল্প আলোতে ঘুম আসার সম্ভাবনা বেশি,তাই যতোটা সম্ভব বেশি আলোতে পড়ার চেষ্টা করুন।
- বিছানায় পড়তে না বসে চেয়ারে বসুন। এতে আরামদায়ক ভাব কেটে যাবে আর ঘুম আসার সম্ভাবনাও কমবে।
- রাতের বেলা কঠিন বিষয় পড়া থেকে বিরত থাকুন। এতে মস্তিষ্ক সহজেই ক্লান্ত হয়। তাই যতোটা সম্ভব রাতে সহজ বিষয়গুলি পড়ুন।
- একা একা পড়া অনেকের কাছেই একঘেয়ে একটা ব্যাপার মনে হতে পারে। এজন্য গ্রুপস্টাডি করতে পারেন। তবে গ্রুপের সবাইকে পড়ুয়া হতে হবে। পড়ায় কিন্তু আড্ডাবাজি চলবেনা।
- পড়ার উদ্দেশ্য রাখুন নতুন কিছু শেখা। এতে করে নিজের ভেতর একটা আগ্রহ তৈরি হয়। তাই পড়াকে করে তুলুন ইন্টারেস্টিং বিষয়। ঘুম আসবেনা বলে দেয়াই যায়।
- জীবনের লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে নিয়ে তাতে ফোকাস করুন। নিজেকে বোঝান আপনাকে আসলেই কিছু একটা করতে হবে। নিজের ক্যারিয়ারের প্রতি ধ্যান দিলে ঘুম ছুটে পালাবে।
এরপরও যদি কোনো সমাধান না হয় তবে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
ঘুম আসে কেন
মেলাটনিন ও সেরাটোনিন হরমোন হলো ঘুমের নিয়ন্ত্রক। মেলাটনিন পেনিলিয়ান গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়। পেনিলিয়ান আমাদের মস্তিষ্কের কেন্দ্রে অবস্থান করে। মেলাটনিন বেশি নিঃসৃত হয় অন্ধকারে। তাই রাতের বেলায় ঘুম পায় বেশি। এছাড়াও ভাত, কলা, আঙুর, ওটস, মিষ্টি আলু, গরম দুধ, মধু খেলে ঘুম আসে। কারণ এই খাবারগুলো খেলে খেলে পেনিয়াল প্রন্থি উদ্দীপিত হয়ে মেলাটনিন নিঃসরণ করে বলে ঘুম আসে।
বসে থাকলে ঘুম আসে কেন
একটানা কিছু একটা করতে থাকলেই একঘেয়েমি চলে আসে। যেমন টানা লম্বা সময় বসে থাকা। এভাবে লম্বা সময় একইভাবে বসে থাকলে ঘুম আসে৷ একঘেয়েমির ফলে মস্তিষ্কে মেলাটোনিন হারমোনের নিঃসরণ ঘটে। এই হরমোন দ্রুত ঘুম আসতে সাহায্য করে বলে বসে থাকলে ঘুম আসে।
রাতে ঘুম তাড়ানোর উপায়
ক্লান্তি থেকে ঘুম আসে। সারাদিন পরিশ্রম করার পর রাত হতেই চোখে ঘুম নেমে আসে। কিছু বিষয় থেকে রাতের ঘুম তাড়ানো যায়। তবে রাতে ঘুম তাড়ানো খুব একটা ভালো কাজ নয়। যাদের অনিদ্রার সমস্যা আছে তাদের রাতে ঘুম আসেনা এমনিতেই। দীর্ঘ সময় বিছানায় শুয়ে থাকার পরও ঘুম না আসার সমস্যা হলো অনিদ্রার সমস্যা। অনিদ্রার কারণে অস্থিরতা, অমনোযোগ ও স্মৃতিহ্রাসের মতো সমস্যা হতে পারে। এছাড়া মানসিক চাপ বেশি থাকলেও রাতে ঘুম আসেনা। তবে নিয়ম মেনে রাত জাঁগলে কোনো সমস্যা হয়না এমনটাই মতামত বিশেষজ্ঞদের৷ এজন্য রাতের প্রতিটি কাজের পরিকল্পনা করে রাখুন। চা - কফি খেতে পারেন। নির্দিষ্ট বিরতি দিয়ে চা - কফি খেলে রাতে ঘুম তাড়ানো যাবে। নিজেকে উষ্ণ রাখতে পারেন। ঠান্ডা পরিবেশে ঘুম দ্রুত আসে। তবে রাত জাঁগার পরে নিয়ম মাফিক ঘুমিয়ে নিতে ভুলবেন না।
কি খেলে রাতে ঘুম আসেনা
কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে রাতে ঘুম আসেনা। তাই রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে না চাইলে বুঝেশুনে খাওয়া ভালো। যেমন: অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার। এই খাবারে এসিডিটির সমস্যার সৃষ্টি করে ফলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়। ঘুমের আগে গ্রীন টি খেলে রাতে ঘুম আসেনা। চা কফির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এছাড়া ফাস্টফুড খেলে রাতে ঘুম আসতে সমস্যা হয়। কোমল পানীয় ঘুমের হরমোন নিঃসরণকে বাধাগ্রস্ত করে ফলে ঘুম আসেনা। আইস্ক্রিম, চকলেট বা মিষ্টি জাতীয় খাদ্য, যেগুলোতে প্রচুর পরিমানে চিনি থাকে সেসব খাবার খেলে রাতে ঘুম আসেনা। তাই রাতে ঘুম না আসা থেকে রেহায় পেতে হলে চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার না খাওয়া ভালো।
দুপুরে ঘুম তাড়ানোর উপায়
দুপুরে ঘুম আসে মুলত ভারী খাবার খাওয়ার ফলে। তাই ভারী খাবার না খেলে দুপুরের ঘুম আসা আটকাতে পারবেন। এর বদলে ড্রাই ফ্রুটস, শুকনো বা হালকা কোনো খাবার খেতে পারেন। এতে দুপুরে ঘুম তাড়ানো যাবে। অনেকে দুপুরে ঘুম তাড়ানোর জন্য চা কফি বা ধুমপান করেন। যা মোটেও স্বাস্থের জন্য ভালো নয়। তাই যতোটা সম্ভব এড়িয়ে চলবেন। দুপুরে খাওয়ার পর শুয়ে না থেকে বরং হাটাহাটি করতে পারেন অথবা আড্ডা দিতে পারেন কারো সাথে। দুপুরের বিরক্তিকর ঘুমটা কাটানো যাবে অনেকাংশে।
অধিক সময় পড়ার উপায়
কোলাহোলমুক্ত একটি নিস্তব্ধ পরিবেশে মনোযোগ ভালো থাকে। তাই পড়ার স্থানটা যতোটা সম্ভব কোলাহোল থেকে দূরে রাখা ভালো। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এমন ডিভাইস পড়ার স্থান থেকে যথেষ্ট দূরে রাখা, যাতে চাইলেই ব্যবহার করা না যায়৷ সম্ভব হলে মায়ের কাছে জমা রাখা যেতে পারে। এতে অধিক সময় পড়ার ডিস্ট্রাকশন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। অনেক্ষণ টানা পড়ার ফলে একঘেয়েমি চলে আসে, তাই পড়ার মাঝেমাঝে কিছু হেঁটে নেয়া যেতে পারে। অথবা হেঁটে হেঁটে পড়লে আরো ভালো। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে পানি খাওয়া যেতে পারে। ঘুম ঘুম ভাব আসলে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করে নিলে ভালো হয়। মোটামুটি এই নিয়মগুলো মানলে অধিক সময় ধরে পড়াশোনা করা যায়।
সকালের ঘুম দূর করার উপায়
সকালের ঘুম দূর করার প্রধান উপায় হলো নিয়মমাফিক চলা। সারাদিন কি করবো না করবো তা নিয়ে একটা রুটিন করে নেয়া ভালো। দুপুরের আগে পর্যন্ত করা কাজগুলোর জন্য একটা টু ডু লিস্ট বানিয়ে রাখুন। স্নুজ বাটনকে ভুলে যাওয়া ভালো। আমরা অনেকেই এলার্ম দিয়েও ঘুম থেকে উঠতে পারিনা তার কারণ হলো স্নুজ বাটন। আর দশ মিনিট পর উঠবো ভেবে ওঠা হয়না। তাই উচিৎ এলার্ম বাজার সাথে সাথেই উঠে পড়া। রাতে দেড়ি করা ঘুমানো থেকে বিরত থাকতে হবে। চার ঘন্টা নয়, বরং ছয় থেকে সাত ঘন্টার ঘুম হাতে রেখে ঘুমাতে হবে। সঠিক সময়ের অল্প আগে ঘুম ভাঙলেই উঠে যেতে হবে। প্রতিদিন রুটিন মাফিক একই সময়ে ঘুমানো এবং ওঠা জরুরী। ঘুম থেকে উঠেই ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। একটু হাটাহাটি করলে ঘুম ঘুম ভাবটাও কেঁটে যায়।
ঘুম তাড়ানোর প্রাকৃতিক উপায়
ঘুম কমানোর প্রাকৃতিক উপায় হলো প্রকৃতির নিয়ম মেনে চলা। সময়মত ঘুমানো এবং সময়মত জেঁগে ওঠা। নিয়মিত শরীরচর্চা করা। পরিমাণমতো পানি পান করা। স্মার্টফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখা। অতিরিক্ত টেনশন না করা। চারপাশের পরিবেশ ঠিক রাখা। এছাড়া গান শুনতে পারেন। অথবা নিজের ভালো লাগায় ধর্মীয় বানী বা তেলাওয়াত শুনতে পারেন।
অফিসে ঘুম দূর করার উপায়
অফিসে কাজ করার ফাঁকে প্রায়ই ঘুম ঘুম ভাব কিংবা অলসতা দেখা দেয়। অফিসে ঘুম দূর করার উপায় হিসেবে পানি খাওয়া যেতে পারে। হাঁটাহাঁটি করা যেতে পারে। কিছুক্ষণ কলিগদের সাথে আড্ডা দিতে পারলেও ঘুম কাটানো যায়। ঠান্ডা পানি দিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নিতে পারলে ভালো হয়। অফিসে দুপুরে ভারী খাবার না খাওয়া যেতে পারে। তার বদলে হালকা কোনো পুষ্টিকর খাবার খাবেন। চা - কফি খেতে পারেন। ঠান্ডা কোমল পানীয় অফিসে ঘুম না আসতে অনেকটা সহায়ক।
অতিরিক্ত ঘুম কোন রোগের লক্ষ্মণ
ঘুম নিয়ন্ত্রিত হয় সেরাটোনিন হরমোনের প্রভাবে, যেখানে অতিরিক্ত ঘুম এই হরমোনের কার্য্য সাধনে ব্যঘাত ঘটায়। ফলে মাথাব্যথা জনিত সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া অতিরিক্ত ঘুমের ফলে ডিপ্রেশন দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত ঘুমের স্বাভাবিক শারীরিক কার্যক্রমে গড়মিল দেখা দেয়। ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনের উপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। অতিরিক্ত ঘুমের ফলে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নারীদের ফার্টিলিটির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে৷ এছাড়াও অতিরিক্ত ঘুমের ফলে শরীরে শক্তি কমে যায় এবং রক্তে শর্করার পরিমান বেড়ে যায়।