পছন্দের কলেজ না পাওয়া, যাতায়াত সমস্যা, পিতামাতার বদলি, মানসম্মত কলেজ না পাওয়া কিংবা কলেজের আর্থিক খরচ বহণ করার ক্ষমতা না থাকলেই আমরা কলেজ পরিবর্তনের চিন্তা করি। তখন মাথায় আসে
- কীভাবে কলেজ ট্রান্সফার করবো,
- চট্টগ্রাম বোর্ডে কলেজ ট্রান্সফার করতে কি করতে হবে,
- কলেজ ট্রান্সফার হতে কী কী লাগবে,
- কলেজ ট্রান্সফার হতে কত টাকা খরচ হবে, ইত্যাদি প্রশ্ন। চলুন জেনে নেয়া যাক বিস্তারিত। প্রথমেই জানাচ্ছি,
একাদশ শ্রেণি কলেজ ট্রান্সফার করবো কিভাবে
চট্টগ্রাম বোর্ডে ছাড়পত্রের মাধ্যমে কলেজ ট্রান্সফার করতে পারবেন। কলেজ ট্রান্সফার করার জন্য বোর্ড থেকে ১ মাস সময় দিয়ে নোটিশ দেয়। এইসময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট ডকুমেন্টস, ফি, এবং প্রয়োজনীয় অনুমতি, আবেদনপত্রসহ বোর্ডে জমা দিতে হয়। অতঃপর বোর্ড যাচাই বাছাই করে আপনার আবেদন মঞ্জুর করলে আপনি ছাড়পত্রের কপি নিয়ে নির্দিষ্ট কলেজে ভর্তি হতে পারবেন।
একাদশ শ্রেণি কলেজ ট্রান্সফার করতে যা যা লাগবে:
১। ছাড়পত্র আবেদন ফরম
২। eSIF বা রেজিষ্ট্রেশনের কপি
৩। আবেদন ফরমের প্রয়োজনীয় তথ্য
৪। প্রয়োজনীয় ফি
৫। এসএসসি একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
৬। যদি বিষয় চেঞ্জ করে থাকেন তার অনুমতিপত্র (যদি থাকে)
একাদশ শ্রেণি কলেজ ছাড়পত্রের আবেদন ফরম কোথায় পাবো
চট্টগ্রাম বোর্ডের ওয়েবসাইটে ছাড়পত্রের আবেদন পত্রের পিডিএফ পাবেন। অথবা কম্পিউটার দোকানে গিয়ে কলেজ ট্রান্সফার ফরম বললেই প্রিন্ট করে দিবে। কলেজ ট্রান্সফার আবেদন ফরম ডাউনলোড লিংক: এখানে
eSIF বা রেজিষ্ট্রেশন কপি কোথায় পাবো
আপনি বর্তমানে যে কলেজে অধ্যয়ন করছেন সেখানে আপনার রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে। eSIF মানে হলো Electronic Student Information Form, এটা আপনি কলেজ থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন, যে কলেজে বর্তমানে আছেন।
একাদশ শ্রেণি কলেজ ট্রান্সফার করতে কত টাকা ফি লাগবে?
যদি এক বোর্ড থেকে অন্য বোর্ডে যেতে চান তাহলে ১২০০ টাকা।
যদি একই বোর্ডের ভিন্ন কলেজে যেতে চান তাহলে ১০০০ টাকা।
একাদশ শ্রেণি কলেজ ট্রান্সফার করার শর্ত
- কোন কলেজে যাবেন ঠিক করতে হবে
- সেই কলেজে আসন খালি থাকতে হবে
- সেই কলেজে একই বিষয় থাকতে হবে
- সেই কলেজে যাওয়ার ন্যুনতম জিপিএ থাকতে হবে
- সেই কলেজের প্রিন্সিপালের অনুমতি থাকতে হবে
- প্রতিটা ডকুমেন্টস সত্যায়িত করতে হবে
একাদশ শ্রেণি কলেজ ট্রান্সফার করার ধাপ
- আবেদন ফর্ম প্রিন্ট করে হাতে লিখে পুরণ করুন।
- পুরণকৃত ফরমটা নিয়ে বর্তমান কলেজে গিয়ে ছাড়পত্রের অনুমতি নিন এবং eSIF কপি সংগ্রহ করুন।
- এবার ফরমটা নিয়ে যে কলেজে ট্রান্সফার হবেন সেই কলেজে গিয়ে অনুমতি ও স্বাক্ষর করুন।
- বোর্ডে আবেদন ফি জমা দিয়ে জমা রশিদ সংগ্রহ করুন।
একাদশ শ্রেণি কলেজ ট্রান্সফার আবেদন ফি জমা করবো কীভাবে?
-চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড ভবনস্থ সোনালী ব্যাংক শাখায় জমা দিতে হবে। রশিদ বুঝে নিতে হবে। কারো সাথে নগদ লেনদেন করা যাবেনা।
- অনলাইনেও পেমেন্ট করা যাবে। এজন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রামের ওয়েবসাইটে যেতে হবে। (লিংক: www.bise-ctg.gov.bd)
অনলাইন পেমেন্ট ও ভেরিফাই আইকনে ক্লিক করে পেমেন্ট টাইপ এ 'ছাড়পত্র (কলেজ পরিবর্তন) ' সিলেক্ট করে বিকাশ, রকেট,নগদ বা কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। পেমেন্ট করে পে স্লিপ প্রিন্ট করে নিবেন।
সবশেষে,
পুরণকৃত আবেদন ফরম,eSIF বা রেজিষ্ট্রেশন কপি, পেমেন্ট রশিদ, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট এবং অন্যকোনো ডকুমেন্টস থাকলে সেটা সহ একত্র করে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কলেজ শাখায় স্বশরীরে গিয়ে জমা দিয়ে আসতে হবে।
অতঃপর বোর্ডের মঞ্জুরের অপেক্ষা করতে হবে। বোর্ড যাচাই বাছাই করে দেখে যৌক্তিক মনে করলে আপনাকে অনুমতি দিবে। যদি উপরের সবগুলো কাজ ঠিকমতো করেন তাহলে অনুমতি পাবেন। অসম্পূর্ণ আবেদন গ্রহণযোগ্য হবেনা।
আরও পড়ুন: গুচ্ছ ভর্তি পরিক্ষার প্রশ্ন ব্যাংক
চট্টগ্রাম বোর্ড থেকে মঞ্জুর করলে কীভাবে বুঝবো?
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রামের ওয়েবসাইটে নোটিশ আকারে কয়েক ধাপে ফলাফল প্রকাশ হয়। সেখানে আপনার নাম তালিকায় থাকবে। যদি না থাকে পরবর্তী ফলাফলের অপেক্ষা করুন বা বোর্ডে যোগাযোগ করুন।
একাদশ শ্রেণি কলেজ ট্রান্সফার বোর্ড মঞ্জুরের পর কী করবো?
বোর্ড মঞ্জুরের অনুমতি পত্রটি নিয়ে বর্তমান কলেজে যান, কলেজ সেটা দেখানো মাত্র আপনাকে চুড়ান্ত টিসি বা ছাড়পত্র দিয়ে দিবে। এই টিসি নিয়ে যেই কলেজে যেতে চেয়েছেন সেখানে গিয়ে ভর্তি ফি দিয়ে ভর্তি হয়ে যাবেন৷