আধুনিক বানিজ্যের দুনিয়ায় ক্রিপ্টোকারেন্সি অন্যতম একটি উত্তপ্ত আলোচনার বিষয়। বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত এই কারেন্সির ব্যবহার বৈধ নয়। তবে ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে কমবেশি জানা আছে অনেকেরই। তবু অনেকের মধ্যেই বিটকয়েন নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা কিংবা বিভ্রান্তি। বিনিয়োগকারীরা কিন্তু থেমে নেই, ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করে এরই মধ্যে উপার্জন করা শুরু কিংবা লাভবান হয়ে চলেছে অনেক ব্যবসায়ী। ক্রিপ্টোকারেন্সির এই অস্থির প্রকৃতি বিশ্বের অন্যান্য দেশীয় কারেন্সির মতোই। মুল্যমান কম হওয়ায় ইতিমধ্যে অনেক দেশেই মানুষ প্রতিদিনের জীবনে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার শুরু করেছে। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে বসেই মানুষ প্রতিদিনের জীবনে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার করবে সেটা চোখ বন্ধ করে বলে দেয়া যায়।
ব্যবহার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন দেশের সরকার ক্রমে ক্রিপ্টোকারেন্সির বৈধতা আর ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে। লেনদেন সহজ করা এবং গোপনীয়তা ফ্যাক্টরকে মাথায় রেখে, আইল অফ ম্যান-এর মতো জায়গাগুলো ব্লকচেইন ইন্ডাস্ট্রির জন্য দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। মাল্টা এবং সুইজারল্যান্ডের মতো দেশ ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের সুবিধার্থে আইন পরিবর্তনের দিকে নজর দিয়েছে, যেটা প্রতিদিনের জীবনে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহারকেই উৎসাহিত করছে। ফলাফলস্বরূপ এরই মধ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহারে পরিবর্তন লক্ষণীয়। বিভিন্ন কোম্পানি সাধারণ টাকার মতোই ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেন করছে প্রতিদিন। ভবিষ্যতে হয়তো ক্রিপ্টোকারেন্সি হয়ে উঠবে আন্তর্জাতিক লেনদেন আর প্রতিদিনের জীবনে বিনিময়ের মাধ্যম।
আর্টিকেলটি পড়ে যা যা জানতে পারবেন:
অনলাইন ক্যাসিনোতে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার
নতুন আইডিয়া কাজে লাগানোর এক্সপেরিমেন্ট হিসেবে অনলাইন ক্যাসিনো অনেকটাই সহায়ক। অনলাইন লটারি কিংবা ক্যাসিনোর মতো ব্যবস্থাপনা আরো সহজলভ্য হয়ে গেলে আগ্রহী মানুষের অভাব হবেনা। বর্তমানে ক্রিকেট বা খেলাধুলা বিষয়ক অনলাইন বাজি ধরার সাইটগুলোর প্রতি মানুষের আগ্রহ দেখলেই সেটা স্পষ্ট বোঝা যায়। অনলাইন ক্যাসিনোতে যদি শুধুমাত্র ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেনের সুযোগ করে দেয়া হয় তবে সেটার ব্যবহারই প্রাধাণ্যতা পাবে। যদিও সমস্যা এড়াতে বেশিরভাগ নেতৃস্থানীয় অনলাইন ক্যাসিনো ক্রিপ্টোকারেন্সি গ্রহণ করার পর অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হওয়ার সাথে সাথেই সেগুলোকে সাধারণ মুদ্রায় রূপান্তর করে নেয়। তবে একচেটিয়া ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার শুরু হলে অনলাইন ক্যাসিনোতে এই সমস্যাটিরও সমাধান হয়ে যাবে।
রেস্টুরেন্টে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার
নিচক কোনো কল্পকাহিনি নয় আর, ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার হবে রেস্টুরেন্টে। টাকা দিয়ে নয় বরং বিটকয়েন দিয়ে কিনতে পারবেন পিজ্জা বার্গার স্যান্ডউইচ। বর্তমান এই ট্রেন্ডের যুগে ক্রিপ্টোকারেন্সি হতে যাচ্ছে কার্যকর একটি মার্কেটিং কৌশল।
উদাহারন হিসেবে বলা যায় কেএফসি'র বিটকয়েন বাকেট এর কথা৷ এটা শুধুমাত্র ভাইরালই হয়নি, বরং হাস্যরসের ভেতর দিয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সির অথেনটিসিটিও প্রমান করে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত কানাডিয়ান বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে এই সুবিধাটি পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্বের প্রতিটি দেশের রেস্টুরেন্টের লেনদেন হবে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে, সেই দিনটা ঘনিয়ে আসছে শীঘ্রই।
অনলাইন শপিং এ ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার
ডিজিটাল বানিজ্যের যুগে অনলাইন শপিং লেনদেনের আদর্শ মাধ্যম হতে পারে ক্রিপ্টোকারেন্সি। বিটকয়েনের সবচেয়ে বড় সমর্থকদের একটি হলো মাইক্রোসফট, যারা বিটকয়েন ব্যবহার করে তাদের প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ এবং গেম কেনার সুযোগ দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ের আরেকটি আকর্ষণীয় পরিবর্তন হলো শুধুমাত্র বিটকয়েনে আটকে না থেকে বেশ কয়েকটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি চালু করেছে। অনলাইন শপিং এর ক্ষেত্রে সেসব কারেন্সির
ব্যবহার হচ্ছে হরহামেশাই।
ভ্রমণে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার
বিমান ভ্রমণ এবং হোটেলের ক্রমবর্ধমান ভাড়ার পরিমান দেখলে বোঝা যায় লেনদেনের জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করা কতোটা স্বাভাবিক। ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের পেছনে অন্যতম উদ্দেশ্য ছিলো বড় আকারের লেনদেনগুলোকে নিরাপদ করে আরো সহজলভ্য বিনিময় গড়ে তোলা এবং বিভিন্ন প্রকার ফি থেকে মুক্ত করা। যদিও এয়ারলাইনসগুলো থেকে আরো অনেক কিছু চাওয়ার আছে তবে এক্সপেডিয়ার মতো পোর্টাল বিটকয়েন বিনিময়কে আরো উন্মুক্ত করে দিয়েছে। যদিও তাদের নো রিফান্ডের মতো কঠোর নীতি বিক্রয়কার্যকে কিছুটা সংশয়ী ও জটিল করে তুলে। তারপরও এটাকে এগিয়ে যাওয়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ধরে নেয়া যায়। প্রতিনিয়ত বিটকয়েন ব্যবহারের এই পরিধি বৃদ্ধিই জানান দিচ্ছে, একটা সময় প্রচলিত টাকার মতোই প্রতিদিনের জীবনে ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার হবে খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। সেইদিন আর বেশি দূরে নেই। আপনার কি মতামত?